বাংলাদেশে সাইড হাসল হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং

Freelancing as a Side Hustle in Bangladesh

সম্প্রতি বছরগুলোতে, ফ্রিল্যান্সিং বিশ্বব্যাপী দ্রুত বাড়তে থাকা একটা চাকরির ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটা আসলে কী? ফ্রিল্যান্সিং হলো একটা দীর্ঘমেয়াদী চাকরিতে আটকে না থেকেএকটা একটা করে প্রজেক্টের ভিত্তিতে ক্লায়েন্টদের সেবা দেওয়া, ।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের একটা রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন শ্রমের সরবরাহকারী, যা বিশ্ব ফ্রিল্যান্স বাজারের প্রায় ১৬% দখল করে আছে।

সাইড হাসল হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এমন লোকদের জন্য একটা অসাধারণ সুযোগ যারা ফুল-টাইম চাকরি না ছেড়েই তাদের আয় বাড়াতে চান। এতে টাইম ম্যানেজমেন্টের অসাধারন ফ্লেক্সিবিলিটি আর বাস্তব জগতের নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সময় সঠিক প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া খুবই জরুরি। এমন অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই কাজ পেতে পারেন।

আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলো আপওয়ার্ক, ফাইভারএবং ফ্রিল্যান্সার.কম এর মতো ফ্রিল্যান্সিং জগতে সুপরিচিত নাম। এগুলো সারা বিশ্বের ফ্রিল্যান্সারদের এমন সব ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয় যারা নির্দিষ্ট দক্ষতা বা স্কিলসেট খুঁজছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রতিযোগিতা বেশি, কিন্তু ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজাইন, লেখালেখি ইত্যাদি বিভিন্ন সেক্টরে প্রচুর কাজের সুযোগ থাকে।

তবে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব সুবিধা-অসুবিধা আছে। আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সুযোগ বেশি, কিন্তু প্রতিযোগিতাও বেশি আর ফি-ও চড়া (যেমন, আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের ১০-২০% নেয়)। BDJobs এর মতো স্থানীয় প্ল্যাটফর্মে কাজ কম থাকে যা বেশিরভাগ রিমোট টাইপের, প্রজেক্ট-ভিত্তিক নয়, কিন্তু এগুলোতে ফি কম বা নেই বললেই চলে, আর নতুনদের জন্য এগুলো ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে সহজ।

বাংলাদেশে চাহিদাসম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতাগুলো কি কি

যদিও বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা নানা রকম দক্ষতা অফার করতে পারে, কিন্তু সব ক্ষেত্রে চাহিদা সমান নয়। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট আর প্রোগ্রামিং চাহিদার তালিকার শীর্ষে। দিন দিন আরো বেশি ব্যবসা অনলাইনে আসায়, HTML, CSS, JavaScript, আর React বা Angular এর মতো ফ্রেমওয়ার্কে দক্ষতার চাহিদা খুব বেশি। বাংলাদেশে AI আর ব্লকচেইন এর মতো উন্নত ক্ষেত্রেও ডেভেলপারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

গ্রাফিক ডিজাইন আর মাল্টিমিডিয়াও ফ্রিল্যান্সিং এর একটা জনপ্রিয় ক্ষেত্র। লোগো ডিজাইন থেকে শুরু করে মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করা পর্যন্ত, গ্রাফিক ডিজাইনারদের চাহিদা সবসময়ই থাকে। এই ক্ষেত্রের পেশাদারদের জন্য Adobe Photoshop, Illustrator, আর After Effects এর মতো টুল জানা জরুরি।

যাদের লেখার দিকে ঝোঁক বেশি কন্টেন্ট রাইটিং আর অনুবাদ তাদের জন্য ভালো অপশন। ফ্রিল্যান্স লেখকরা ব্লগ লেখা, কপিরাইটিং, টেকনিক্যাল রাইটিং, এমনকি অনুবাদের কাজও নিতে পারে। বাংলাদেশের ডিজিটাল উপস্থিতি বাড়ার সাথে সাথে, অনেক ব্যবসা তাদের কন্টেন্ট মার্কেটিং জোরদার করতে চাইছে, যা এই ক্ষেত্রটাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

একইভাবে, ডিজিটাল মার্কেটিং আর SEO ব্যবসাগুলোর অনলাইন ভিজিবিলিটি বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, আর পে-পার-ক্লিক বিজ্ঞাপনে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

সবশেষে, ডাটা এন্ট্রি আর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার তুলনামূলক সহজ উপায়। যদিও এগুলোতে টেক বা ক্রিয়েটিভ ক্ষেত্রের তুলনায় আয়ের সম্ভাবনা কম, কিন্তু এই ধরনের কাজের চাহিদা সবসময়ই থাকে, বিশেষ করে ছোট ব্যবসাগুলোর মধ্যে যাদের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হেল্প দরকার।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যাত্রা শুরু করবেন

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা ভয়ের ব্যাপার মনে হতে পারে, কিন্তু সঠিক কৌশল নিয়ে এগোলে এটা সহজ হয়ে যায়। প্রথম ধাপ হলো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে একটা আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করা। আপনার প্রোফাইল আসলে আপনার রেজুমে, এটা আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, আর আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে এমন বিষয়গুলো তুলে ধরা উচিত। একটা পেশাদার ছবি ব্যবহার করুন, পরিষ্কার ও সংক্ষিপ্ত বায়ো লিখুন, আর আপনার দক্ষতাগুলো এমনভাবে লিস্ট করুন যা সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের আকর্ষণ করবে।

একটা পোর্টফোলিও তৈরি করাও খুব জরুরি। পোর্টফোলিও আপনার আগের কাজগুলো দেখায় আর ক্লায়েন্টদের একটা ধারণা দেয় যে আপনার কাছ থেকে তারা কী ধরনের মানের কাজ আশা করতে পারে। যদি আপনি নতুন নতুন শুরু করছেন আর দেখানোর মতো কোনো প্রজেক্ট না থাকে, তাহলে নমুনা প্রজেক্ট তৈরি করতে পারেন বা কাজের অভিজ্ঞতা তৈরি করতে বিনামূল্যে কাউকে কাজ করে দিতে পারেন।

গবেষণা করা জরুরি প্রতিযোগিতামূলক রেটসেট করার ক্ষেত্রে, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপনার মতো দক্ষতা সম্পন্ন অন্য ফ্রিল্যান্সাররা কত চার্জ করছে তা দেখুন। উদাহরণস্বরূপ, আপওয়ার্কে নতুন ফ্রিল্যান্সাররা ঘণ্টায় ৫ থেকে ১৫ ডলার চার্জ করতে পারে, যেখানে বেশি অভিজ্ঞ পেশাদাররা ক্ষেত্র অনুযায়ী ঘণ্টায় ৩০ ডলার বা তার বেশি চার্জ করতে পারে।

প্রজেক্টের জন্য কার্যকরভাবে বিড করা পরের বড় বাধা। কোনো কাজের জন্য আবেদন করার সময়, আপনার প্রস্তাবটি ক্লায়েন্টের চাহিদার সাথে মিলিয়ে তৈরি করুন। সাধারণ একটা প্রস্তাব পাঠানোর বদলে, উল্লেখ করুন কীভাবে আপনার দক্ষতা তাদের প্রজেক্টের প্রয়োজনের সাথে সরাসরি মিলে যায়। দেখান যে আপনি জব পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন, এবং ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি এই কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

ফুল-টাইম চাকরির সাথে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে সামলাবেন

সাইড হাসল করা লোকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ফুল-টাইম চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সামলানো। সময় ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সফল ফ্রিল্যান্সাররা প্রায়ই এমন একটা রুটিন তৈরি করে যাতে দুটোই সামলানো যায়। পরিষ্কার লক্ষ্য ঠিক করা আর বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নেওয়ায় কাজের চাপ কম মনে হয়। ট্রেলোর এবং গুগল ক্যালেন্ডার এর মতো টুল ব্যবহার করে ডেডলাইন ট্র্যাক করা আর সময় ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়।

নিজের লক্ষ্য নিয়ে বাস্তববাদী হওয়াও জরুরি।ফ্রিল্যান্সিং ফ্লেক্সিবিলিটি দেয় ঠিকই, কিন্তু এটা কমিট্মেন্টও বেশি চায়। বেশি কাজ নিয়ে নেওয়া বার্নআউটের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তাই ফুল-টাইম চাকরি না ছেড়ে যতটুকু সামলাতে পারবেন শুধু ততটুকু কাজ নেওয়া উচিত।

পার্ট-টাইম ফ্রিল্যান্সিং করার সময়, ক্লায়েন্টদের সাথে আপনার উপস্থিতি নিয়ে পরিষ্কারভাবে যোগাযোগ করা নিশ্চিত করুন।তাদের আগে থেকেই জানিয়ে দিন আপনার কাজের সময় কখন আর তারা কখন আপডেট আশা করতে পারে। আপনি স্বচ্ছ আর নির্ভরযোগ্য থাকলে বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট বুঝবে যে ফ্রিল্যান্সিং আপনার সাইড গিগ হলেও আপনি এটা নিয়ে সিরিয়াস।

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর লিগ্যাল ও ফাইন্যান্সিয়াল কনসিডারেশনস

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এখনও তুলনামূলক নতুন পেশা, আর অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের লিগ্যাল ও ফাইন্যান্সিয়াল রেস্পস্নিবিলিটি নিয়ে শিওর নন। যদিও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটা করলে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, যেমন সরকারি সহায়তা পাওয়া বা সহজে ট্যাক্স ফাইল করা।

ট্যাক্স বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের বার্ষিক আয়ের উপর নির্ভর করে। ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভিনিউ (NBR) অনুযায়ী, একটা নির্দিষ্ট সীমার উপরে আয় করা ফ্রিল্যান্সারদের ট্যাক্স ফাইল করতে হয়। সেজন্য ইনকাম ট্যাক্সের জন্য আপনার আয় ও ব্যয়ের হিসাব রাখা খুবই জরুরি।

বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ হলো পেমেন্ট গ্রহণ করা।আন্তর্জাতিক পেমেন্টের জন্য পেওনিয়ার এবং Skrill এর মতো প্ল্যাটফর্ম সাধারণত ব্যবহার করা হয়, বিকাশ বা Nagad এর মতো অপশন আছে দেশীয় লেনদেনের জন্য। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর ফি আর এক্সচেঞ্জ রেট বুঝে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো আপনার আয়কে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স সেক্টরের চ্যালেঞ্জগুলি কিভাবে মোকেবেলা করবেন

অনেক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা কিছু ইউনিক চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হন। ইন্টারনেট সংযোগ একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে যারা বড় শহরগুলোর বাইরে থাকেন। একটা নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ থাকা অত্যন্ত জরুরি। এচাড়াও, আপনি আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী একটা ব্যাকআপ ইন্টারনেট কানেকশন বা উচ্চ গতির প্ল্যানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরেকটি কমন সমস্যা, যা আপনার ফ্রিল্যান্সিং কাজে বাধা দিতে পারে বা আপনার ডেডলাইন মিসও করাতে পারে। এর সমাধান হিসেবে একটি আনইন্টারাপ্টিবল পাওয়ার সাপ্লাই (UPS বা এমনকি একটি ছোট জেনারেটরে বিনিয়োগ করতে পারেন যাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়ও আপনার প্রয়োজনীয় ডিভাইসগুলো চালু থাকে।

পরিকাঠামোগত সমস্যা ছাড়াও, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা প্রায়ই অন্য দেশের,বিশেষ করে ভারত আর ফিলিপাইনের ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে তুমুল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হন। বাজারে নিজেকে আলাদা করে তোলার জন্য, ফ্রিল্যান্সারদের একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও গড়ে তুলতে হবে এবং রিটার্নিং ক্লায়েন্ট-বেজ তৈরী করার জন্য চমৎকার কাস্টমার সার্ভিস দিতে হবে। বাজারে প্রবেশের জন্য বিনামূল্যে নমুনা দেওয়া বা শুরুতে কম রেট নেওয়া সাহায্য করতে পারে।

সবশেষে, আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে আস্থা গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং কাজ দূর থেকে করা হয়, ক্লায়েন্টরা জানতে চান যে তারা সময়মতো মানসম্পন্ন কাজ পাওয়ার জন্য আপনার উপর নির্ভর করতে পারেন কিনা। নিয়মিত আপডেট আর ভিডিও মিটিংয়ের মাধ্যমে খোলামেলা যোগাযোগ স্থাপন করা ক্লায়েন্টদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে দিতে পারে।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে নিজের দক্ষতা বাড়াবেন এবং নিরন্তর শেখা অব্যাহত রাখবেন

ফ্রিল্যান্সিং একটি গতিশীল ক্ষেত্র যেখানে নিরন্তর শেখা অব্যাহতরাখা দরকার। সৌভাগ্যক্রমে, লেটেস্ট ট্রেন্ডের সাথে আপডেট থাকতে এবং দক্ষতা উন্নত করতে ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য করার জন্য প্রচুর অনলাইন রিসোর্স রয়েছে। Coursera, উডেমিরএবং এবং লিংকডইন লার্নিং এর মতো প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, আর গ্রাফিক ডিজাইনের মতো ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী মূল্যের কোর্স অফার করে।

এছাড়াও, বাংলাদেশে অনেক স্থানীয় ওয়ার্কশপ আর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে যা ফ্রিল্যান্সারদের ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে। BASIS (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস) এর মতো সংস্থা প্রায়ই ফ্রিল্যান্সার আর আইটি পেশাদারদের সাহায্য করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করে।

অন্য ফ্রিল্যান্সারদের সাথে নেটওয়ার্কিং করাও শেখা ও বেড়ে ওঠার আরেকটি চমৎকার উপায়। ফেসবুক গ্রুপ, লিংকডইন কমিউনিটি, বা স্থানীয় মিটআপে যোগ দেওয়া মূল্যবান ইনসাইট অর্জন করার সুযোগ করে দিতে পারে।

একজন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তৈরি করবেন কিভাবে

ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তৈরি করা আলাদা হয়ে ওঠার মূল চাবিকাঠি। এর একটি উপায় হলো একটি পেশাদার ওয়েবসাইট তৈরি করা যেখানে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টরা আপনার পোর্টফোলিও দেখতে পারবে, প্রশংসাপত্র পড়তে পারবে, এবং আপনার সেবা সম্পর্কে আরও জানতে পারবে।

এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করাও আপনার ফ্রিল্যান্স সেবা প্রচার করার একটি দারুণ উপায়। লিংকডইন, Facebookএমনকি Twitter এর মতো প্ল্যাটফর্ম আপনাকে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট এবং আপনার ক্ষেত্রের অন্যান্য পেশাদারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করতে পারে। ব্লগ পোস্ট বা প্রজেক্ট আপডেটের মতো মূল্যবান কন্টেন্ট শেয়ার করা আপনার অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে পারে।

নেটওয়ার্কিংও একটি ব্র্যান্ড গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনলাইন কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ করা বা ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্টে যোগ দেওয়া আপনাকে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট এবং সহযোগীদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করতে পারে।

পরিশেষে

বাংলাদেশে সাইড হাসল হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং শুধু অতিরিক্ত আয় করার একটা উপায়ই নয় - এটা দক্ষতা বাড়ানো, পেশাদার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, এবং আরও বেশি আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করার একটা সুযোগ। ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাথে ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা পর্যন্ত নানা চ্যালেঞ্জ জড়িত থাকলেও, এটা বৃদ্ধি ও সাফল্যের বিশাল সম্ভাবনাও বয়ে আনে।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ে প্রবেশ করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে এখনই সময়। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং বাজার ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে, আর গভার্নমেন্ট সাপোর্ট এবং প্রচুর অনলাইন রিসোর্সের কারণে শুরু করা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।